সেপ্টেম্বর বিএনপির প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর কর্মসূচি ঘিরে নারায়ণগঞ্জ. মানিকগঞ্জ, নেত্রকোনা ও সিরাজগঞ্জে পুলিশের সাথে বিএনপি নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা হয়েছে। পুলিশের বাদী হয়ে করা তিনটি মামলায় অজ্ঞাত মিলিয়ে ৪ হাজার ৮১ জন আসামী। নারায়ণগঞ্জে যুব দলের কর্মী পুলিশের গুলিতে নিহত হলেও মামলা হয়নি। পুলিশ একটি মামলা কথা বলছে। তারা বলছে নিহত শাওনের ভাই মিলন অজ্ঞাত আসামীদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। অন্যদিকে গত ২ সেপ্টেম্বর বিএনপি যুবলীগের পাল্টা পাল্টি সমাবেশের কাড়নে বগুড়া শহরের কালী তলা এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে পুলিশ। নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীদের মহড়ায় পূর্বনির্ধারিত সম্মেলন করতে পারে নি উপজেলা বিএনপি। ওদিকে কালীগঞ্জে শহরের খালপাড়া এলাকায় (১ সেপ্টেম্বর) সকালে পুলিশের সাথে বিএনপি নেতা কর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় সদর থানায় রাতেই মামলা হয়েছে। এতে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের ২ হাজার ৫০০ নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে এজাহারে ৩৩ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
জ¦ালানি তেলসহ নিত্যপন্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে এবং পুলিশের গুলিতে ভোলায় ছাত্রদল ও সেচ্ছাসেবক দলের দু, নেতা নিহতের প্রতিবাদে ২২ আগস্ট থেকে দেশ জুড়ে কর্মসূচি পালন করছিল বিএনপি। গত ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত টানা ১১ দিনে বিভিন্ন স্থানে বিএনপির ৩৭ টি কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগে নেতা-কর্মী ও পুলিশের হামলার অভিযোগ উঠেছে। এ পর্যন্ত ১৪ টি স্থানে বিএনপি নেতাদের বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা হয়েছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, ভবিষ্যতে বিএনপির কর্মসূচি আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংঘঠন গুলো প্রতিহত করবে। ২ সেপ্টেম্বর পুলিশের ওপর বিএনপির হামলার অভিযোগে সারা দেশে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে যুবলীগ। কেন্দ্রীয় কর্মসূচিতে যুবলীগ চেয়ারম্যান ফজলে শামস পরশ বলেন, মাঠে থেকে সব নৈরাজ্যের জবাব দেওয়া হবে। ওদিকে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আন্দোলনের নামে বিএনপির কর্মসূচিতে সহিংসতার উপাদান যুক্ত হলে আওয়ামী লীগ মোকাবেলা করবে। ওদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ৭ মে দলের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে বিরোধীদের সভা সমাবেশে বাধা না দেওয়ার ইঙ্গিত দেন। তিনি বলেন, বিরোধী দলগুলো তাদের মিছিল মিটিং সমাবেশ গুলো স্বাধীন ভাবে করুক।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগির বলেন, আমাদের প্রতিটি পদক্ষেপ অত্যন্ত সাবধানে, সর্তক ভাবে নিতে হবে। এবার আমাদের জীবনপন লড়াই করতে হবে। হয় জীবন না হয় মরণ। সেজন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে রাজপথে একটা দুর্বার গণআন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। আর আন্দোলনে ভয়ে সরকার বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে গায়েবি মামলা করছে। হামলা চালাচ্ছে, গুলি করছে।
মত প্রকাশের স্বাধীনতা সাংবিধানিক অধিকার। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় আন্দোলন সংগ্রাম প্রতিবাদ-প্রতিরোধ সংগত। তবে তা হতে হবে অহিংস। রাজনৈতিকআদর্শ-নীতি নিয়ে পরস্পরিক রাজনৈতিক দলগুলোর মতভেদ থাকবেই। পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও পরমত সহিষ্ণুতা মাধ্যমে তা রাজনৈতিক ভাবে মোকাবেলা করতে হবে। এখানে সন্ত্রাসের কোনো সুযোগ নেই। তাই বিএনপি ও আওয়ামী লীগ দেশের বড় দল হিসেবে সচেতন না হয়। তবে সংঘর্ষ চলতেই থাকবে।