
এস এম নাসির মাহমুদ।।
এই ৩ দিনের মুশলধারে ভারি বৃষ্টি পাতের ফলে আমতলী ও তালতলী উপজেলার ৩০টি গ্রামে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। বৃষ্টিতে মাটি নরম হয়ে যাওয়ায় বিভিন্ন এলাকার শতাধিক গাছ উপড়ে পড়ার খবর পাওয়া গেছে। এভাবে বৃষ্টি আরো দীর্ঘয়িত হলে পুকুর ঘেড়সহ আমনের বীজতলার ক্ষতির আশঙ্কায় আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে কৃষকরা।
জানা গেছে, গত শনিবার থেকে মুশলধারে টানা ভারী বৃষ্টি পাতের ফলে আমতলী ও তালতলী উপজেলার অধিকাংশ নীচু এলাকা তলিয়ে গেছে। পানি নিষ্কাশনের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা। অনেক জায়গায় খাল বিল উপচে বাড়ি ঘরে ঢুকে পড়েছে পানি। পুকুর মাছের ঘের তলিয়ে যাওয়ার আতঙ্কে দিন কাটছে চাষীদের। কৃষকের আমনের বীজতলাও রয়েছে দেড় থেকে দুই ফুট পানির নীচে। আমতলী সদর ইউনিয়নের উল্টাখালী গ্রামের নাসির মাহমুদ জানান, ৩দিনের ভাড়ি বৃষ্টিতে বাড়ির পুকুর তলিয়ে গেছে। বৃষ্টি আরো দীর্ঘয়িত হলে মাছ ভেসে যাবে তাই জাল এনে পুকুর পাড় আটকিয়ে দিয়েছি। খোজ নিয়ে জানা গেছে, ৩দিরে বৃষ্টিতে উপজেলার কলাগাছিয়া, গুলিশাখালী, খেকুয়ানী, ডালাচারা, আঙ্গুলকাটা, পূর্বসোনাখালী, পশ্চিম সোনাখালী, হাজার টাকার বাধ, হরিমৃতজ্ঞয়, কৃষ্ণনগর, টেপুরা, দক্ষিণতক্তাবুনিয়া, রাওঘা, কাঠালিয়া, কুকুয়া, সেকান্দারখালী, ভায়লাবুনিয়া, পূর্বচিলা, পশ্চিম চিলা, ঘোপখালী, পাতাকাটা, চন্দ্রা, ঘটখালী এবং তালতলীর নিশানবাড়িয়া, আমখোলী, অংকুজানপাড়া, ফকির হাট, বেহালা, জয়ালভাঙ্গাসহ ৩০টি গ্রামে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। এসকল স্থানে পানি নিষ্কাষনের কোন ব্যবস্থা না থাকায় এ অবস্থা হয়েছে। দক্ষিণ তক্তাবুনিয়া গ্রামের মোশারফ হোসেন বলেন, খাল ভরাট হয়ে যাওয়া এবং পর্যাপ্ত স্লুইস গেট না থাকা এবং খাল কচুরি পানায় ভরে যাওয়ায় পানি নামতে না পাড়ায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। আমতলী পৌরসভার ৩নং, ৫নংও ১নং ওয়ার্ডে ড্রেনেজ ব্যবস্থার অভাবে অনেক জায়গায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। শহর ঘুরে দেখা গেছে, আমতলী এমইউ বালক মাধ্যমিক বিদ্যলয়ের মাঠ পানিতে ভরে গেছে। আশপাশের অনেক এলাকায়ও দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা। পানি জমে থাকায় মাটি নরম হয়ে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের এবং সড়কের শতাধিক গাছ ধসে পড়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, সোমবার সকালে আমতলী এমইউ বালক মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একটি বিশাল আকারে চাম্বল গাছ ধসে মাঠের মধ্যে পড়ে গেছে।
আমতলী উজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা হালিমা সর্দার জানান,আমতলী উপজেলায় ১০ হাজার পুকুর এবং রয়েছে। যে সকল ঘের এবং পুকুর ঝঁুকির মধ্যে রয়েছে তাতে জাল দিয়ে পাড় আটকিয়ে দেওয়ার জন্য চাষীদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
আমতলী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন কর্মকর্তা মো. রাসেল জানান, আমতলী উপজেলায় ১৬৫৫ হেক্টর জমিতে আমনের বীজতলা রয়েছে। অধিকাংশ বীজতলা পানিতে তলিয়ে গেছে। বৃষ্টি আরো ২-৪দিন বিলম্বিত হলে বীজ পচে নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।