লতলী (বরগুনা) প্রতিনিধিঃদৈনিক দিগন্তর পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার ও তালতলী সাংবাদিক ঐক্যজোটের সভাপতি এবং তালতলী সাংবাদিক ইউনিয়নের কার্যনির্বাহী সদস্য আবুল হাসানকে মুঠোফোনে চোখ উৎপাটন এবং পায়ের রগ কেটে হত্যার হুমকি দিয়েছে মহিলা ইউপি সদস্য পদপ্রার্থী পারভীন বেগম ও তার পূত্র ইমরান জিয়া।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অজ্ঞাত নম্বর থেকে ওই সাংবাদিককে ফোন করে অশ্লীল ভাষায় গালাগালি চোখ উঠিয়ে দিয়ে হাত-পায়ের রগ কেটে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছ।
মুঠোফোনের ওই কল রেকর্ডিং এ শোনা যায়, পারভীন বেগম অশ্লীল ভাষায় তাকে গালমন্দ করতে থাকেন। এসময় সাংবাদিক হাসানকে তালতলী বাজারে আসতে বলে হাত পায়ের রগ কেটে হত্যার হুমকি দেন।
হুমকি দাতার কল রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হলে স্থানীয় সংবাদ কর্মীদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। তারা প্রশাসনের নিকট দুঃসাহসি ঐ নারীর শাস্তির দাবী জানিয়েছেন।
জানা গেছে, ইমরান জিয়া তালতলী সাংবাদিক ঐক্যজোটের সদস্য ছিলেন। ইতিপূর্বে তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, মিথ্যা মামলা দিয়ে মানুষ হয়রানি, মানুষকে ভয় ভীতি দেখানো, মোবাইল ছিনতাইয়ের অভিযোগে মামলা চলমান সহ সংগঠন বিরোধী কার্যকলাপের সথে জরিত থাকার অভিযোগে তাকে নোটিশ প্রদান করা হয়। তিনি নোটিশের তোয়াক্কা না করে, অত্র সংগঠনের সদস্যদের সাথে এ নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি করে। এবং তার বিরুদ্ধে উপরোক্ত ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় সকল সদস্যদের সম্মতিক্রমে তাকে তালতলী সাংবাদিক ঐক্যজোট থেকে স্থায়ী ভাবে বহিস্কার করা হয়।
এরই জের ধরে সাংবাদিক ঐক্যজোট সভাপতি (তালতলী উপজেলা) আবুল হাসানের কাছে টাকা পাবে বলে লোকালয়ে গুজব ছড়ানো, তাহাকে একাধিক বার হত্যার হুমকি দেয়া সহ রাত বিরাতে বিভিন্ন মানুষ দিয়ে তাকে অনার্থক বিরক্ত করা, মানহানিকর কথা বলা এবং অত্র সংগঠনের সভাপতি ও সম্পাদকের হাত-পা গুড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেয়।
এ বিষয়ে সাংবাদিক আবুল হাসান গত ১৯ অক্টোবর (রোববার) রাতে তালতলী থানায় উপস্থিত হয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। তাতে উপজেলার বড় বগী ইউনিয়নের ছোট ভাইজোড়া এলাকার ফার্নিচার ব্যবসায়ী আ.রহিমের স্ত্রী পারভিন বেগম ও ছেলে ইমরান জিয়াকে বিবাদী করা হয়। (তালতলী থানার জি.ডি নং ৪০৩)
সাংবাদিক আবুল হাসান বলেন, মোবাইল ছিনতাই, চাঁদাবাজি ও সাংবাদিক পরিচয় বিভিন্ন মানুষকে ভয়-ভীতি দেখানোর অভিযোগে ইমরান জিয়াকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয় এরই জের ধরে তার মা পারভিন বেগম আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের অপপ্রচার চালাচ্ছে এবং তিনি আমাকে প্রকাশ্যে এবং মুঠোফোনে হত্যার হুমকি দিচ্ছে। আমি আমার জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছি।
অভিযোগ অস্বীকার করে পারভীন বেগম বলেন, আমার ছেলেকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করেছে কেনো। এছাড়াও হাসানের কাছে আমরা টাকা পাব। যেভাবেই হোক টাকা উঠিয়ে ছারবো।
এ বিষয়ে বরগুনা জেলা টেলিভিশন সাংবাদিক ফোরামের সাবেক সাধারন সম্পাদক ও এসএ টিভির জেলা প্রতিনিধি নুরুজ্জামান ফারুক বলেন, এই ঘটনা নিয়ে স্থানীয় গণ্যমান্য ও সিনিয়র সাংবাদিকরা কয়েক দফা বসেছেন। সেখানে আবুল হাসানের কাছে টাকা পয়সা পাবে এমন কোনো সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি। এখন কি কারণে তারা অযথাই হাসানকে হয়রানি করেছেন তা জানি না।
তালতলী সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ও দৈনিক নয়াদিগন্তের সাংবাদিক ইউসুফ আলী বলেন, আবুল হাসান টাকা-পয়সা নিয়েছে এমন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। পারভিন বেগমের ছেলে ইমরান জিয়াকে বহিষ্কার করার কারণে ক্ষিপ্ত হয়ে এসব করছে। তিনি এ ঘটনার সুষ্ঠু সমাধানের জন্য প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
এ বিষয়ে তালতলী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কামরুজ্জামান মিয়া বলেন, ঘটনাটি শুনেছি হাসানের পক্ষ থেকে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন। তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।