কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি।।
পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় ১৩৬ ভূমিহীন পরিবারকে পুনর্বাসনের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার(২৭ নভেম্বর) সকাল ১১টায় কলাপাড়া প্রেস ক্লাব চত্তরে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের সদস্য ইব্রাহিম শিকারী, বাউল ফিরোজা বেগম, মো.ফোরকান হাওলাদার, নুর হোসেন, ইব্রাহিম, জেসমিন, আলো বেগম, আনোয়ার মিরা, রাসেল এবং সঞ্চালনা করেন কলাপাড়া পরিবেশ ও জন সুরক্ষা মঞ্চের সদস্য মো. সগির হোসেন।
এ সময়ে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের সদস্যরা কলাপাড়ায় নির্মানাধীন অন্যান্য বৃহৎ প্রকল্পের ক্ষতিগ্রস্থদের ন্যায় পুনর্বাসনের দাবি জানান।তারা বলেন, আমরা বাস্তুভিটাহীন হওয়ার কারণে সরকার আমাদেরকে বসবাসের জন্য ইটবাড়িয়া গ্রামে আন্ধারমানিক নদীর পাড়ে বেড়িবাঁধের ঢালে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের জমিতে কলোনী করে বন্দোবস্ত দিয়েছিলেন। যার পর থেকে আমরা দীর্ঘদিন ধরে বেড়িবাঁধের ঢালে বসবাস করে আসছি।সম্প্রতি পায়রা বন্দরের প্রথম টার্মিনাল থেকে পায়রা বন্দর প্রশাসনিক ভবন হয়ে ঢাকা-কুয়াকাটা আঞ্চলিক সড়কের সাথে
যুক্ত হওয়ার বিকল্প সড়ক হিসাবে পায়রা বন্দরের গেট থেকে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতু পর্যন্ত বেড়িবাঁধের উপর রাস্তা নির্মাণ করা হচ্ছে। এই রাস্তা নির্মাণ করতে আমাদের কলোনীসহ বেড়িবাঁধের ঢালে বসবাসকারী ১৩৬টি পরিবারকে উচ্ছেদ করা হচ্ছে। ফলে ভূমিহীন মুক্ত কলাপাড়ায় আমরা নতুন করে ভূমিহীন হতে যাচ্ছে।
ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের সদস্যরা আরো বলেন যে, আমরা বেড়িবাঁধের বাইরের দিকে বসবাস করার ফলে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন প্রাকৃতিক দূর্যোগ যার মধ্যে ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছাস এবং বর্ষাকালে জোয়ার-ভাটার পানিতে প্লাবিত হওয়া
আমাদের নিত্যদিনের সঙ্গী। যেহেতু এই জমির মালিক বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড তাই আমাদেরকে উচ্ছেদ করা হলেও কোন ধরনের ক্ষতিপূরণ বা পুনর্বাসন করা হচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে মাথা গোঁজার শেষ আশ্রয় হারালে আমাদের জীবন-যাত্রা সম্পূর্ণভাবে অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।
বক্তারা আরো বলেন. কলাপাড়া উপজেলায় বৃহৎ প্রকল্প গুলোর মধ্যে পায়রা বন্দরে ক্ষতিগ্রস্থ ৩,৪২৩ টি পরিবারকে পর্যায়ক্রমে পুনর্বাসন করা হচ্ছে। পাশাপাশি পায়রা ১৩২০ মেগাওয়াট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ক্ষতিগ্রস্ত ১৩০টি
পরিবারকে স্বপ্নের ঠিকানা নামক পুনর্বাসন কেন্দ্রে পুনর্বাসিত করা হয়েছে। পটুয়াখালী ১৩২০ মেগাওয়াট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র (আরএনপিএল) এর ক্ষতিগ্রস্ত ২৮১টি পরিবারের জন্য ‘আনন্দপল্লী’ এবং ‘স্বপ্ননীড়’ নামে দুইটি পুনর্বাসন কেন্দ্রের নির্মাণ করা হয়েছে।একইসাথে পটুয়াখালী ১৩২০ মেগাওয়াট সুপারথার্মাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র (আশুগঞ্জ) নির্মাণের জন্য জমি অধিগ্রহণে ক্ষতিগ্রস্ত ১৮০টি পরিবারের জন্য পুনর্বাসন কেন্দ্র নির্মাণের কাজ চলছে।
অন্য দিকে আমাদেরকে উচ্ছেদ করা হলেও কোন ধরনের পুনর্বাসন, ক্ষতিপূরণ অথবা সহযোগীতা করা হচ্ছে না। এমতাবস্থায় ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের পুনর্বাসনের কোন উদ্যোগ গ্রহণ না করে রাস্তা নির্মাণের কাজ শুরু করা হলে ভূমিহীন মুক্ত কলাপাড়ায় নতুন করে প্রায় দেড়শ’ পরিবার ভূমিহীন হয়ে পড়বে।