বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে, বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক এমপি আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ, তার জেষ্ঠ পুত্র বরিশাল সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ, তার স্ত্রী লিপি আব্দুল্লাহসহ তাদের পরিবারের ছয়জনের ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে। পাশাপাশি মঙ্গলবার দুপুরে আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে বরিশালের জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) হাসানাত আব্দুল্লাহসহ তার পরিবারের ছয়জনের ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব স্থগিত রাখতে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দেশন দিয়েছে। মঙ্গলবার বিএফআইইউ থেকে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা দেওয়া হয়। বিএফআইইউ’র এক কর্মকর্তা জানান, আলোচিত ব্যক্তিদের ব্যাংক হিসেবে সন্দেহজনক লেনদেনের বিষয়ে খতিয়ে দেখতে তাদের হিসাব জব্দ করা হয়েছে।
অপরদিকে বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক এমপি আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার দুপুরে বরিশালের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলার আবেদন করা হয়েছে। মামলাটি আমলে নিয়ে আগৈলঝাড়া থানার ওসিকে এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন আদালতের বিচারক। জেলা ও দায়রা জজ আদালতের নাজির ইলিয়াস বালী মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন-বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক এমপি আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ, বরিশাল রেঞ্জের সাবেক ডিআইজি হুমায়ুন কবির, সাবেক অতিরিক্ত ডিআইজি আকরাম হোসেন, সাবেক জেলা পুলিশ সুপার এহসান উল্লাহ, সাবেক এএসপি জাহাঙ্গীর মল্লিক, আগৈলঝাড়া থানার সাবেক ওসি মনিরুল ইসলাম, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুর রইচ সেরনিয়াবাত, গোলাম মর্তুজা খান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু সালেহ লিটন সেরনিয়াবাত, সৈয়দ আশরাফ মিয়া, মামুন কবিরাজ, অনিমেষ মন্ডল ও স্বপন মন্ডল।
মামলার বাদি আগৈলঝাড়া উপজেলা সদরের নগরবাড়ি এলাকার বাসিন্দা আশিকুর রহমান আসিফ এজাহারে উল্লেখ করেন, আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহসহ আওয়ামী লীগের অন্যান্য নেতৃবৃন্দের (আসামি) নির্দেশে ২০১৫ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি তার বাবা বিএনপি নেতা কবির হোসেন রনিকে পুলিশ ঢাকার বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে। পরবর্তীতে ২১ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাতে উপজেলার বাইপাস সড়কের ব্রিজের পাশে এনে তার বাবাকে কথিত ক্রসফায়ারের নামে আসামি আওয়ামী লীগ নেতাদের নির্দেশে পুলিশ গুলি করে হত্যা করেছে।
অপরদিকে গৌরনদী উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-আহবায়ক বদিউজ্জামান মিন্টুর ওপর হামলার ঘটনায় উপজেলা আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগি সংগঠনের ২৪ নেতাকর্মীর নামোল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরো ৪০/৪৫ জনকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলো-উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জয়নাল হাওলাদার, সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র হারিছুর রহমান, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম হাফিজ মৃধা, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক রেজাউল করিম টিটু, উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ফরহাদ মুন্সি, পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি স্বপন হাওলাদার, সরকারি গৌরনদী কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি সুমন মোল্লা, কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি ও পৌর কাউন্সিলর সুজন হাওলাদার, পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক প্রিন্স রোনাল্ড বেপারী, সরকারি গৌরনদী কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাতুল শরীফ, আওয়ামী লীগ নেতা নয়ন শরীফ, সাবেক পৌর মেয়রের পিএস আল-আমিন ওরফে কালা আলামিন, ওলামালীগ নেতা মাওলানা নুরুল হক, সালাম হাওলাদার, সৈয়দ দিদার, রাসেল ফকির, সাকিল ওরফে মোটা সাকিল, জসিম শরীফ, সুমন সরদার, কালু তালুকদার, রায়হান মিয়া, রাসেল রাঢ়ী, মামুন মিয়া ও সাগর মোল্লা।