এম জাফরান হারুন, , পটুয়াখালীঃ মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে চাকরি রিজাইন দেওয়ার প্রায় ৪ বছর পর আবার যোগদান করেছে এক শিক্ষিকা। এ ঘটনায় এলাকা জুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। কিন্তু প্রভাবশালীদের ভয়ে কেউ কিছু বলতে পারছে না। এমন কি কেউ মুখ খুলছে না। এমন ঘটনা ঘটেছে পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার নাজিরপুর ছোট ডালিমা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে।
ওই প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা যায়, পটুয়াখালীর বাউফলে নাজিরপুর ছোট ডালিমা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা মোসা: মাসুমা বেগম ২০১৮ সালের এপ্রিল মাস থেকে ২০১৯ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকেন। এরপর ২০১৯ সালের মার্চ মাসে চাকরি রিজাইন দিয়ে চলে যায়। এরপর প্রতিষ্ঠান প্রধান ও ম্যানেজিং কমিটি রেজুলেশন লিখে বিধি মোতাবেক ওই শিক্ষিকা মাসুমা বেগমের এমপিও কপিতে নাম কর্তনের জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (ডিজি) পাঠানো হয়। এরপর তার ব্যাংক একাউন্ট থেকে বেতন ভাতা বন্ধ করে দেয়া হয়।
অফিসের কাগজে “অব্যাহতি পত্র প্রদান করিয়াছেন এবং এমপিও কপিতে নাম কর্তন প্র্করিয়াধীন থাকলেও হঠাৎ ২০২২ সালের ১৩ অক্টোবর ৪ বছর পর ওই বিদ্যালয়ে আবার যোগদান করেন ঐ শিক্ষিকা। ১৩ অক্টোবর যোগদান করলেও প্রতিষ্ঠান প্রধান বিল করেন পূর্ণ মাসের ইনক্রিমেন্ট সহ। সরকার ২০১৮ সাল থেকে ৫/: ইনক্রিমেন্ট সুবিধা দেয়। কিন্তু ৪ বছর চাকরি না করেও ঐ শিক্ষিকাকে পূর্ন ইনক্রিমেন্ট সুবিধা দেয় প্রতিষ্ঠান প্রধান।
এ বিষয়ে অত্র প্রতিষ্ঠানের অন্যান্য শিক্ষকগণ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “সর্ব অংগে ব্যাথা ঔষধ দিবেন কোথায়” এই বিধি বহির্ভূত যোগদান কিভাবে সম্ভব? এই শিক্ষিকা প্রায় ৪ বছর আগে চাকরি রিজাইন দিয়ে চলে গেছে। রিজাইন দেওয়ার পূর্বে প্রায় ১১মাস ধরে স্কুলে না এসে ঐ ১১ মাসের বেতন ভাতা তার ব্যাংক একাউন্টে জমা হয় কিভাবে? এরপর এত বছর চাকরি না করেও কিভাবে পূর্ণ ইনক্রিমেন্ট পায়? সর্বোপরি ওই শিক্ষিকা কিভাবে যোগদান করে? আমরা শিক্ষকরা প্রধান শিক্ষকের ভয়ে মুখ খুলতে পারছি না।
এ বিষয়ে চাকরি রিজাইন দেওয়া ওই শিক্ষিকা মাসুমা বেগম মুঠো ফোনে জানান, এটাতো বোঝার বাকি নাই যে, আমি কোথা থেকে কোথায় আসছি। সবাইত এই লেবেলটা ঘুরে আসতে পারে না। এতদিন অনুপস্থিত থাকার পরও চাকরি রিজাইন দেওয়ার ৪ বছর পর কেউ যোগদান করতে পারবে কিনা আমার জানা নেই, তবে আমি করেছি। আমি সরল রেখা মানে কাটা লাইনে কাজ করেছি।
চাকরি রিজাইন দেওয়ার ১১ মাস পূর্বে ক্লাস না করে বেতন ভাতা তোলার ব্যাপারে তিনি বলেন, ওই টাকাটা অন্যান্য শিক্ষকদের দিতে বলেছি কিন্তু হেড স্যার সবাইকে ঠকিয়েছে। ওনার বিচার একদিন বসবে।
এ বিষয়ে অত্র প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক বলেন, ওই শিক্ষিকা চাকরি রিজাইন দেওয়ার পর আমরা অনলাইনে কাগজ পাঠিয়েছিলাম কিন্তু অফিস এমপিও থেকে তার নাম কর্তন না করায় উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের সুপারিশে তাকে যোগদান করার অনুমতি দিয়েছি।
এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জানান, ওই শিক্ষিকা চাকরি রিজাইন দেওয়ার পর উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ আমাকে তদন্তের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। তদন্ত শেষে আমি রিপোর্ট পাঠিয়েছি।
এ বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের বরিশাল অঞ্চলের ডি,ডি বলেন, ঐ শিক্ষিকার বিষয়টি আগে জানতাম না, এখন জেনেছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
You cannot copy content of this page