এম জাফরান হারুন, নিজস্ব প্রতিবেদক,পটুয়াখালী।
পটুয়াখালীর বাউফলে পক্ষ বিপক্ষের মারধরে উভয় পক্ষের ৫জন রক্তাক্ত জখম সহ নিলাফুলা হয়ে আহত হয়েছে। আহতরা সবাই বাউফল হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে।
মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) সকাল ৮টার দিকে উপজেলার দাসপাড়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের দাসপাড়া গ্রামে এঘটনা ঘটে।
সরেজমিনে দেখা যায়, পক্ষের দুইজন আহত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তারা হলেন, ১/মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মজিদ চৌধুরী (৬৫), পিতা মৃত আলী আকব্বর চৌধুরী, ২/ মোঃ মনিরুজ্জামান চৌধুরী (৪২), পিতা মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মজিদ চৌধুরী, সাং দাসপাড়া ২নং ওয়ার্ড, ইউনিয়ন দাসপাড়া। আর বিপক্ষের ১/ মোঃ সাগর ফকির (৩২), ২/ রবিন ফকির (২২), ৩/ মোসাঃ সম্পা আক্তার (২৫), ৪/ মোসাঃ চম্পা আক্তার (১৬), উভয় পিতা মোঃ জাহাঙ্গীর ফকির, পৌরসভা ৯নং ওয়ার্ড, বাউফল।
সরেজমিনে পক্ষের আহতদের মধ্যে মোঃ মনিরুজ্জামান চৌধুরী অভিযোগ করে বলেন, আমার কবলা মূলে জমিতে ওরা জোরপূর্বক লাউগাছ রোপণ করতে ছিল। এমতাবস্থায় আমি বাধা দিলে ওদের মধ্যে সাগর ফকির জিআই পাইপ দিয়ে আমাকে মারধর করে। তা স্থানীয় পর্যায় শালিস ব্যবস্থার জন্য বলা হয়। তা না মেনে আজ সকালে বাড়ি থেকে বের হয়ে রাস্তায় আসামাত্রই পিছন থেকে লোহার রড দিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করে আমাকে রক্তাক্ত জখম সহ আমার বাবা বাধা দিতে এলে তাকেও মারধর করে। আমার মাথা জখমে ১০টি সেলাই দেওয়া হয়েছে।
এদিকে আহত বিপক্ষের মোসাঃ চম্পা আক্তার অভিযোগ করে বলেন, দুইদিন আগে আমাদের দখলে থাকা জমিতে রাস্তার পাশে লাউগাছ রোপণ করতে ছিল আমার ভাই সাগর ফকির। তা নিয়ে তাকে মারধর করে মুক্তিযোদ্ধার ছেলে মনিরুজ্জামান। এতে নাকের নিচে ঠোঁটের উপরে কাটা রক্তাক্ত জখম হয়। পরে বাউফল হাসপাতালে নিয়ে আসলে ৪টা সেলাই করে দেন। আজকেও সাগর ভাইকে এলোপাতাড়ি মারধর করতে দেখলে আমি, আমার বড় বোন ও ছোট ভাই মিলে ধরতে গেলে মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মজিদ আমার গায়ের জামাকাপড় ছিড়ে শ্লীলতাহানি করে। আমি আমার ইজ্জত বাচাতে চেষ্টা করলে আমাকে এলোপাতাড়ি মারধর সহ আমার ভাই ও বোনকে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে।
অভিযোগ করে বিপক্ষের আহত মোঃ রবিন ফকির বলেন, বড় ভাইকে বাচাতে গেলে মনিরুজ্জামান সহ তার বাবা মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মজিদ মিলে আমাদের এলোপাতাড়ি মারধর করে রক্তাক্ত জখম সহ আহত করে। এবং আমার ছোট বোনের জামাকাপড় ছিড়ে শ্লীলতাহানি করে। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে আমাদের হাসপাতালে এনে ভর্তি করে। আমার মাথায় ৫টা সেলাই লেগেছে। বড় বোনের কপালে ৪টা সেলাই লেগেছে। আমি চলমান এইচএসসি পরীক্ষার্থী। আজকে পরীক্ষা দিতে পারিনি। আমরা এর বিচার দাবি করছি।
স্থানীয় রুবেল সহ একাধিক লোকজন জানান, দুইদিন আগে উভয় পক্ষের মারধরের ব্যাপারে কমিশনার আল-মামুন শালিস ব্যবস্থার জন্য একটা সময় দিলে তা মেনে নেননি সাগর। তিনি মাইরের বদলে মাইর দিবেন বলে ওত পেতে থাকে। আজকে মনিরুজ্জামান বাড়ি থেকে বের হয়ে রাস্তায় আসামাত্রই পিছন থেকে এলোপাতাড়ি মারধর করে এবং মনিরুজ্জামান সহ তার ছোট ভাই এবং তাদের বাবা মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মজিদ মিলে তাদেরকে এলোপাথাড়ি পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম সহ আহত করে। কিন্তু চম্পা মেয়েটা একটি কিশোরী, তাকে এভাবে জামাকাপড় ছিড়ে শ্লীলতাহানি করা ঠিক হয়নি।
এ বিষয়ে বাউফল থানার ওসি আল মামুন বলেন, এব্যাপারে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।