জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সরাসরি বেতনভুক শিক্ষক রয়েছেন একশ’র মতো। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটটি খুবই আপডেডেট। কীভাবে বিভিন্ন ফিস জমা দিতে হবে, কীভাবে রশিদ সংরক্ষণ করতে হবে, কীভাবে সোনালীসেবা ব্যবহার করতে হবে ইত্যাদি খুঁটিনাটি তথ্য আছে কিন্তু শিক্ষকদের নাম-পরিচিতি কিছুই নাই। বিশ্ববিদ্যালয়টির বিরূদ্ধে প্রধান অভিযোগ, এই অ্যাফিলিয়েটিং সংস্থাটি কেবল রাজস্ব আদায়ের বিষয়ে মনোযোগী। তাদের আদায়কৃত অর্থের পুরোটাই শিক্ষার্থীদের। সরকার এই বিশ্ববিদ্যালয়কে এক টাকাও দেয় না। দেশের আর কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে এই অবস্থা নেই। শিক্ষার্থীদের দরিদ্র পিতামাতার কষ্টার্জিত অর্থের সদ্ব্যবহার নিয়েও প্রশ্ন আছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের পেছনে তেমন কোনো অর্থ ব্যয় করে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের বেতনভুক শিক্ষকগণও কোনো ক্লাস নেন, এমনটা আমরা দেখিনি। সরকার ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাগারে জমা থাকা অলস ২ হাজার ২৩২ কোটি টাকা জব্দ করার ব্যবস্থা নিয়েছে। তথাপি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের মধ্যে কোনো বিকার দেখা যাচ্ছে না।
গাজীপুরস্থ বিশ্ববিদ্যালয়টির বিরুদ্ধে আরেকটি অভিযোগ, একাডেমিক কাউন্সিল, সিনেট, সিন্ডিকেট ইত্যাদি থাকলেও এর সিদ্ধান্ত গ্রহণ ব্যবস্থা অত্যন্ত কেন্দ্রীভূত। সংশ্লিষ্টরা অভিযোগ করে থাকেন অর্থ আদায় এবং কায়িক শ্রমের ক্ষেত্রে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিকেন্দ্রীকরণ নীতিতে বিশ্বাসী। কোভিড-১৯ সংক্রমণকালে শিক্ষার্থীদের ঘরে বসে পড়াশুনা করার নির্দেশ দেওয়ার মাধ্যমে তারই একটি নিদর্শন দেখা যাচ্ছে।
যাই হোক, সমালোচনা করার উদ্দেশ্যে এই লেখা নয়। শিক্ষার্থীদের জন্য আমাদের উদ্বেগ রয়েছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এই নির্দেশ আসার বহু আগে থেকে ব্যক্তিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগে অনলাইনে ক্লাস নিচ্ছি। আমার কাছে তথ্য রয়েছে, অধিভুক্ত ২৭৫টি সরকারি কলেজে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারভুক্ত শিক্ষকগণ ক্লাস নিচ্ছেন। আমাদের অধিদপ্তরও বিষয়টি অবগত। সম্মানিত মহাপরিচালক মহোদয় আমাদেরকে এই কাজ চালিয়ে যেতে উদ্বুদ্ধ করেছেন। এতদিন পর্যন্ত বিষয়টি এক রকম ছিল। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এই নোটিশের পর সত্যিকারের উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।
প্রথমত, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় বলেছে, কোভিড-১৯ বিদায় নিলে ক্রাশ প্রোগ্রামের থিওরি প্রয়োগ করা হবে। ক্রাশ প্রোগ্রামকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় বিশাল সফলতা বলে দাবি করতে চায়। মাননীয় ডিন বা ভিসি মহোদয় যা-ই বলুন না কেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রাশ প্রোগ্রাম নিয়ে প্রচুর সমালোচনা আছে। সেশনজট কমাতে গিয়ে শিক্ষার মানের সাথে মারাত্মক আপস করা হয়েছে। দ্বৈত পরীক্ষণ পদ্ধতি বাতিল করা এবং সিলেবাস শেষ না করে পরীক্ষা নেওয়াটা সবচেয়ে বড় ক্ষতি করেছে। আর এখন অফিশিয়ালি ঘোষণা দেওয়া হচ্ছে, বাড়িতে বসে পড়াশুনা করার জন্য। বিষয়টি সত্যি উদ্বেগের বলে আমরা মনে করি
You cannot copy content of this page