মোঃ নাহিদুল হক,কলাপাড়া (পটুয়াখালী)।।
কলাপাড়া পৌর শহরের বুক চিরে অবস্থিত জিন খালটি দখলের কবলে পরে অসহায় হয়ে হারিয়েছে তার যৌবনত্ব। গভীরতা ও প্রশস্ততা হারিয়ে স্বাভাবিক পানি প্রবাহ এখন ব্যহত হচ্ছে। পৌর শহরের পানি নিষ্কাশনের প্রধান খালটির এ অবস্থা হওয়ায় অল্প বৃষ্টিতেই সৃষ্ট হচ্ছে
জলবদ্ধতা। যার কারনে ভোগান্তিতে পরছে পৌর শহরসহ টিয়াখালী ইউনিয়নের বাসিন্দারা।অথচ এ খালটি দখলমুক্ত ও খনন করার বিষয়ে নিরব ভূমিকায় রয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
সরেজমিনে দেখা যায়, কয়েক দিনের টানা বর্ষণে কলাপাড়া পৌরশহরের চিংগরীয়া ও টিয়াখালী এলাকায় জলাবদ্ধতায় জনসাধারণের ভোগান্তি এখন চরমে। এসমস্ত এলাকার সড়ক, বাড়ি, ফসলের মাঠ, মাছের ঘের, পুকুর পানিতে তলিয়ে অথই সাগরে পরিনত হয়েছে। অনেকেরই বসত ঘর, রান্না ঘর, গোয়াল ঘর, মুরগীর ঘরসহ সবকিছু পানির নিচে তলিয়ে গেছে। বর্তমানে ওই এলাকার বাসিন্দারা দূর্বিষহ মানবেতর জীবনযাপন করছে। অনেকের ঘরের রান্না বন্ধ রয়েছে। গরু, ছাগল, হাঁসমুরগী
নিয়ে বিপাকে পরেছেন বহুপরিবার। দেখা দিয়েছে গো খাদ্যের সংকট। কারও ঘরের মেঝে তলিয়ে রয়েছে, সড়কে জমে রয়েছে হাটু পানি। চরম জলাবদ্ধতায় মানুষের স্বাভাবিক জীবন যাপন ব্যাহত হচ্ছে । স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি কলাপাড়া পৌর শহরের বুক চিরে আন্দার মানিক নদীর সাথে যুক্ত জিনখাল দখল হওয়া এই
জলাবদ্ধতা সৃষ্টির প্রধান কারন। তবে এই নিয়ে তারা এলাকার প্রভাবশালী ও স্বার্থান্বেষী মহলকে দায়ী করছেন।
চিংগুড়িয়ার বাসিন্দা ও সমাজ সেবক উত্তম কুমার দাস বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ১ ইঞ্চিজমি যেন অনাবাদী না থাকে। কিন্তু তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, টিয়াখালী এবং চিংগুড়িয়া এলাকা সহ জিনখালের বিভিন্ন পয়েন্ট সংকুচিত ও বাঁধ দেয়ার কারনে প্রতিবছর সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় ১০ বছরের অধিক সময় চিংগুড়িয়া ও টিয়াখালীর বহু জমি অনাবাদি রয়েছে। এখানে কোন ধরনের ফসল তারা
চাষ করতে পারছেনা। টিয়াখালীর কৃষক মোঃ শাহজাহান হাওলাদার বলেন, জিন খালের বিভিন্ন পয়েন্ট বাঁধ দিয়ে মাছচাষ এবং খালের দুইপারে বাড়িঘর করে খাল সংকুচিত হওয়ার কারনে ১০/১২ বছর পর্যন্ত তারা বর্ষায় সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় মানবেতর জীবন যাপন করছেন। শহীদুল ইসলাম নামের টিয়াখালীর অপর এক বাসিন্দা বলেন, অবৈধ বাঁধ ও খালের মধ্যে বাড়ি ঘর করার কারনে এই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় একাধিক বাসিন্দা, কৃষক, জেলেসহ সর্বস্তরের মানুষ জিনখালের সকল প্রকার প্রতিবন্ধকতা সরিয়ে, খালের জোয়ার ভাটাসহ স্বাভাবিক পানি প্রবাহ সচল করে
জনদূর্ভোগ কমানোর জন্য স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
এবিষয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট (পটুয়াখালী) নইম উদ্দিন বলেন, আমরা গিয়েছিলাম দেখেছি, জলাবদ্ধতা নিরসনে খুব শিঘ্রই
প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নেয়া হবে।