শিক্ষক—যাঁরা জাতির বিবেক গঠনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন, তাঁদের ন্যায্য অধিকার ও মর্যাদার প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর অবস্থান সবসময়ই জনসাধারণের নজরে থাকে। এমতাবস্থায়, এমপিওভুক্ত ও বেসরকারি শিক্ষকদের আর্থিক নিরাপত্তা, চাকরি জাতীয়করণ এবং স্থায়ীকরণের দাবির সঙ্গে বিএনপির নীতিগত একমত পোষণ নিঃসন্দেহে একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক বার্তা বহন করে।
দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যে স্পষ্ট হয়েছে, তারা রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পেলে শিক্ষকদের জন্য একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিশন গঠনের কথা ভাবছেন। এ ধরনের প্রতিশ্রুতি শুধু রাজনীতি নয়, একটি দায়িত্বশীল সামাজিক অবস্থানেরও প্রতিফলন।
অন্যদিকে, আন্দোলনরত শিক্ষকদের দাবি ঘিরে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির চেষ্টার বিষয়ে বিএনপির সতর্ক উচ্চারণও লক্ষণীয়। এটি দেখায়, দলটি আন্দোলনের প্রতি সহমর্মী হলেও কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা বা নির্বাচন ব্যাহত হওয়ার চেষ্টা মেনে নিতে প্রস্তুত নয়।
আমরা মনে করি, শিক্ষকদের দাবির প্রতি রাজনৈতিক দলগুলোর এমন ইতিবাচক মনোভাবই গণতন্ত্রের শক্ত ভিত গঠনে সহায়ক হতে পারে। কিন্তু প্রশ্ন থেকে যায়—এই নীতিগত সমর্থন কতটা বাস্তবায়নযোগ্য? অতীতে আমরা বহু প্রতিশ্রুতি শুনেছি, বাস্তবে ফলাফল খুব সীমিত ছিল।
এখন সময় এসেছে, রাজনৈতিক দলগুলো কেবল প্রতিশ্রুতিতে সীমাবদ্ধ না থেকে শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়ন ও শিক্ষকদের আর্থসামাজিক নিরাপত্তার ক্ষেত্রে স্পষ্ট রোডম্যাপ উপস্থাপন করবে।
বিশেষত যখন রাষ্ট্রীয় বাজেটের একটা বড় অংশ শিক্ষা খাতে বরাদ্দ হয়, তখন শিক্ষকদের প্রতি অবহেলা শুধু অর্থনৈতিক নয়, নৈতিক দিক থেকেও অমার্জনীয়।
সর্বোপরি, দেশের রাজনৈতিক দলগুলো শিক্ষকদের দাবিকে শুধুমাত্র আন্দোলন বা চাপের ফল হিসেবে নয়, জাতি গঠনের অপরিহার্য শর্ত হিসেবে বিবেচনা করবে—এই প্রত্যাশা রইল।
—
📌 এই সম্পাদকীয়টি পাঠকদের চিন্তা উদ্দীপনায় সহায়ক এবং শিক্ষা ও রাজনীতির সংযোগে একটি ভারসাম্যপূর্ণ বিশ্লেষণ হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। চাইলে আপনি এই প্রতিবেদনটি পত্রিকার সম্পাদকীয় পাতায় স্থান দিতে পারেন অথবা উপ-সম্পাদকীয় হিসেবেও ব্যবহার করতে পারেন।