তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফিরলে সংসদের ক্ষমতা খর্ব হবে কি না—প্রশ্ন প্রধান বিচারপতির
স্টাফ রিপোর্টার | ২২ অক্টোবর ২০২৫, ঢাকা — নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিয়ে আপিল বিভাগের চলমান শুনানিতে আজ প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ গুরুত্বপূর্ণ এক প্রশ্ন তুলেছেন:
“তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফিরলে সেটি কি সংসদের ক্ষমতা খর্ব করবে?”
বুধবার প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের ৭ সদস্যের বেঞ্চে দ্বিতীয় দিনের শুনানিতে এ প্রশ্ন তোলেন তিনি। এই শুনানি চলমান একটি গণমুখী ও সাংবিধানিক বিতর্কের অংশ, যেখানে আলোচনায় উঠে আসছে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের কাঠামো পুনর্বহালের সম্ভাব্যতা ও সাংবিধানিক পরিণতি।
শুনানিতে সুজনের পক্ষে উপস্থাপন
আজ শুনানিতে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)-এর সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ড. শরীফ ভূঁইয়া। তিনি বলেন,
“হাইকোর্ট ও আপিল বিভাগ মিলিয়ে ১২ জন বিচারপতি এ বিষয়ে শুনানি করেছেন। তাঁদের মধ্যে ৮ জন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার পক্ষে মত দিয়েছেন। সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকসহ মাত্র ৪ জন এর বিপক্ষে ছিলেন।”
তিনি আরও বলেন, “এই বাস্তবতায় আপিল বিভাগ একটি গাইডলাইন দিতে পারেন, যা ভবিষ্যৎ নির্বাচন ব্যবস্থার জন্য একটি ন্যায্য পথনির্দেশ হতে পারে।”
সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পাচ্ছে মামলাটি
শুনানির এক পর্যায়ে প্রধান বিচারপতি ঘোষণা করেন,
“তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা সংক্রান্ত আপিল শুনানি শেষ না হওয়া পর্যন্ত আপিল বিভাগের অন্য কোনো মামলার শুনানি হবে না। এটি এখন দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও প্রাধান্যপ্রাপ্ত মামলা।”
এর আগে মঙ্গলবার মামলার প্রথম দিনের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। আপিলকারীদের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, ২০১১ সালে বাতিল হওয়া তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহাল করে আগামী ১৪তম জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে কার্যকর করা হোক।
পটভূমি ও প্রাসঙ্গিকতা
উল্লেখ্য, ২০১১ সালে সংবিধানের ১৫তম সংশোধনের মাধ্যমে নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করা হয়। এরপর থেকে নির্বাচনকালীন সময়ে বিদ্যমান সরকার ব্যবস্থার অধীনেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। তবে এ ব্যবস্থার নিরপেক্ষতা ও গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে বারবার প্রশ্ন উঠেছে।
এই মামলার রায় নির্বাচনী ব্যবস্থার ভবিষ্যৎ রূপরেখা নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অভিমত।