মোঃ নাহিদুল হক,কলাপাড়া(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি।।
ঢাকায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৭০ বছরের বৃদ্ধ মন্নান মাতুব্বরের মৃত্যুতে হত্যা মামলার আসামী করা হয়েছে দরিদ্র ও শ্রমজীবি পরিবারের আটজনকে। পটুয়াখালীর কলাপাড়ার বালিয়াতলী ইউনিয়নে এ ঘটনায় বিক্ষুদ্ধ পাঁচ শতাধিক নারী-পুরুষ বুধবার সন্ধায় এ মিথ্যা হত্যা মামলা থেকে নিরীহ গ্রামবাসীদের হয়রানী বন্ধ এবং মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছে। পারিবারিক বিরোধের জের ধরে গত ২১ মে সন্ধায় বালিয়াতলী ইউনিয়নের মজিবর হাওলাদারের সাথে মন্নান মাতুব্বরের স্থানীয় বাজারে বসে কথা কাটাকাটি হয়।
এক পর্যায়ে মন্নান মাতুব্বরকে স্থানীয় মানুষের সামনে প্লাষ্টিকের চেয়ার দিয়ে পায়ে আঘাত করে মজিবর হাওলাদার। তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে উপস্থিত ব্যবসায়ী ও স্থানীয়রা বিবাদ মিটিয়ে মন্নান মাতুব্বরকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে পাঠিয়ে দেয়। কিন্তু এ ঘটনার চারদিন পর মন্নান মাতুব্বরের মেয়ে সুমি আক্তার তার পিতাকে মারধরের অভিযোগে মজিবর হাওলাদারকে প্রধান আসামী করে ৯ জনের বিরুদ্ধে কলাপাড়া থানায় মামলা দায়ের করে। এ মামলায় ৯ আসামীর মধ্যে ৬জনের হাজতবাসের পর জামিনে মুক্ত হয়। কিন্তু গত ৫ আগষ্ট ঢাকায় একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীণ অবস্থায় বৃদ্ধ মন্নান মাতুব্বর মারা যায়। এ ঘটনায় মৃত মন্নানের মেয়ে গত ১৩ আগষ্ট ওই নয় আসামীর বিরুদ্ধে কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে।
মামলার প্রধান আসামী মজিবর রহমান বলেন, সামান্য বিষয় নিয়ে তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে প্লাষ্টিকের চেয়ার দিয়ে তিনি মন্নান মাতুব্বরের পায়ে কয়েকটি আঘাত করেছেন। সালিশে চিকিৎসা খরচ বাবদ ৬০ হাজার টাকা দেয়ার সিদ্ধান্তও হয়। তারা ২০ হাজার টাকাও নিয়েছেন। কিন্তু ওই বৃদ্ধ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হলেও এখন তাদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করে গ্রামের নিরীহ মানুষকে প্রতিনিয়ত মামলায় জড়ানোর হুমকি দিচ্ছে।
গ্রামবাসীদের দাবি মন্নান মাতুব্বর কেন কিভাবে মারা গেছে এর একটি সঠিক তদন্ত তারাও দাবি করছেন। তারাও জানতে চান প্রকৃত মৃত্যুর ঘটনা। কিন্তু কেন নিরীহ গ্রামবাসীদের আসামী করে হয়রানী করা হচ্ছে। তারা এজন্য প্রশাসনের সঠিক তদন্ত ও হস্তক্ষেপ কামনা করছেন। এ মামলার নয় নং সাক্ষী মৃত মন্নান মাতুব্বরের মেয়ে রুনা বেগম বলেন, তার বাবাকে মজিবর হাওলাদার যখন মারধর করে তখন মামলার আসামীরা তাকে না মারলেও তাকে রক্ষায় এগিয়ে আসেনি। তারা দাড়িয়ে দাড়িয়ে দেখেছে। এজন্য তাদের শিক্ষা দিতে আসামী করা হয়েছে। বালিয়াতলী ইউপি চেয়ারম্যান এবিএম হুমাযুন কবির বলেন, সামান্য বিষয় নিয়ে মারামারির পর তারা স্থানীয়ভাবে সালিশ করে সমাধান করে দিয়েছিলেন। মন্নান
মাতুব্বরকে ক্ষতিপূরণের টাকাও দেয়া হয়েছে। কিন্তু কেন মামলায় নিরীহ গ্রামবাসীদের আসামী করে হয়রানী করা হচ্ছে বিষয়টি বুঝতে পারছেন না। তবে বিষয়টির সঠিক তদন্ত হওয়া উচিত বলে জানান।