
দণ্ডিতদের বক্তব্য প্রচারে কঠোর ব্যবস্থা নেবে সরকার
দণ্ডিত ও পলাতক আসামিদের বক্তব্য প্রচার বন্ধে কঠোর সতর্কতা জানিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়। মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) কার্যালয়ের সরকারি ফেসবুক পেজে প্রকাশিত বিবৃতিতে জানানো হয়, এসব বক্তব্য দেশের সার্বিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতাকে হুমকির মুখে ফেলছে। সতর্কতা অমান্য করলে আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানানো হয়।
এর আগের দিন, সোমবার (১৭ নভেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বর্তমানে ভারতে অবস্থানরত শেখ হাসিনাকে দুটি অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করে। ৪৫৩ পৃষ্ঠার রায়ে তিন আসামির অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। রায় ঘোষণার পরদিন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে দণ্ডিতদের বক্তব্য ছড়িয়ে পড়লে সরকারী সতর্কতা জারি করা হয়।
জাতীয় সাইবার সুরক্ষা এজেন্সি (এনসিএসএ) জানিয়েছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন ডিজিটাল মাধ্যমে মিথ্যা, উস্কানিমূলক ও ঘৃণামূলক বক্তব্য ছড়িয়ে পড়া গভীর উদ্বেগের বিষয়। তাদের মতে, এসব কনটেন্ট জনশৃঙ্খলা ব্যাহত করছে, সামাজিক স্থিতিশীলতা নষ্ট করছে এবং সহিংসতার আশঙ্কা বাড়াচ্ছে।
এনসিএসএ আরও জানায়, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামির বক্তব্য প্রচার বিচার বিভাগের প্রতি অবমাননাকর। এসব কনটেন্টে সরাসরি সহিংসতার আহ্বান রয়েছে, যা অগ্নিসন্ত্রাসসহ বিভিন্ন অপরাধকে উসকে দিতে পারে।
সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ-২০২৫ অনুযায়ী, দেশের বাইরে থেকেও কেউ সহিংসতা-উদ্বুদ্ধ বা ঘৃণামূলক কনটেন্ট প্রচার করলে তা বাংলাদেশের আইনে অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। অধ্যাদেশের ২৬ ধারা অনুযায়ী এ ধরনের অপরাধে দুই বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড, সর্বোচ্চ দশ লক্ষ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড দেওয়া যেতে পারে।
সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, কোনো কনটেন্ট দেশের অখণ্ডতা বা জননিরাপত্তা ক্ষুণ্ন করছে বলে মনে হলে তা অপসারণ ও ব্লক করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সরাসরি ব্যবস্থা নেবে এবং প্রয়োজন হলে বিটিআরসিকেও নির্দেশনা পাঠানো হবে। তাই সকল গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীদের দণ্ডিত ব্যক্তিদের বক্তব্য প্রচার থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
নতুন সতর্কবার্তায় স্পষ্ট করা হয়েছে যে, জুলাই গণঅভ্যুত্থান ও সাম্প্রতিক রায়কে কেন্দ্র করে ডিজিটাল অস্থিরতা রোধে সরকার কঠোর অবস্থান বজায় রাখবে।