আল মামুন,নওগাঁ।
মহান মুক্তিযুদ্ধের দুঃসহ দিনগুলোর মধ্যে ২৮ আগস্ট নওগাঁর মান্দা উপজেলার জন্য এক বেদনাবিধুর ঐতিহাসিক দিন। এই দিনে পাকুড়িয়া ইউনাইটেড উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে পশ্চিম পাকিস্তান সেনাবাহিনী স্থানীয় রাজাকারদের সহায়তায় গ্রামের বহু লোককে প্রতারণা করে জড়ো করে গণহত্যা চালায়। তাদের ব্রাশফায়ারে ১২৮ জন মানুষ সেদিন ঘটনাস্থলেই শহীদ হন। বহু মানুষের শরীরে আজও বুলেটের আঘাতচিহ্ন নিয়ে ধুকে ধুকে কোনমতে বেঁচে আছেন। প্রতিবছর পাকুড়িয়া ইউনাইটেড উচ্চ বিদ্যালয় এবং শহীদ পরিবারের উদ্যোগে এখানে ২৮ আগস্ট মিলাদ,দোয়া ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
এবছরও এই দিনে এখানে শহীদ বেদীতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
পাকুড়িয়া ইউনাইটেড উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুল লতিফ মন্ডল এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উক্ত আসনের সাংসদ সদস্য জনাব মুহাঃ ইমাজ উদ্দিন প্রামাণিক। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ডাঃ ইকরামুল বারী টিপু, উপজেলা নির্বাহী অফিসার লায়লা আরজুমান বানু, উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি নাজিম উদ্দিন মন্ডল, বিএনপি সভাপতি মকলেছুর রহমান মকে প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এমপি মুহাঃ ইমাজ উদ্দিন প্রামাণিক বলেন,স্বাধীনতার পর আওয়ামী লীগ শুরু থেকেই পাকুড়িয়ার শহীদদের স্মরণ করেছে এবং আহতদের জন্যও আওয়ামী লীগই বিভিন্ন সময়ে দান-অনুদান দিয়েছে, স্কুল সহ এলাকার রাস্তাঘাট উন্নয়ন করেছে ।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ডাঃ ইকরামুল বারী টিপু বলেন, যে চেতনায় মুক্তিযুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল তা এখনও পুরোপুরি বাস্তবায়ন হয়নি। আজও এদেশে ভোটের অধিকারের জন্য মানুষকে আন্দোলন করতে হয়, এখনও মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জিত হয়নি। যে বৈষম্যের কারণে আমরা পশ্চিমা পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে অস্ত্র হাতে নিয়েছি আজও সমাজে সেই বৈষম্য বিদ্যমান। এখন ক্ষমতাসীনরা আমাদের সম্পদ লুটপাট করে বিদেশে পাচার করে। সাধারণ মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা হলেই কেবল পাকুড়িয়ার ১২৮ জন সহ এদেশের ৩০ লক্ষ শহীদের আত্মা শান্তি পাবে, অন্যথায় নয়।
এই সময় দোয়া মোনাজাতে অন্যান্য নেতৃবৃন্দ ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।।