দেশকে একেবারে নতুন করে গড়ে তুলতে হবে মন্তব্য করে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন- জুলাই আমাদের পুনর্জন্মের মাস, এটি শুধু স্বৈরাচার মুক্তির মাস নয়। মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে জুলাই বিপ্লবের ১ বছর পূর্তি উপলক্ষে বাংলাদেশে জাতিসংঘ মানবাধিকার মিশনের আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, শুধু উপরে একটি প্রলেপ দিয়ে নয়, গভীর থেকে পরিবর্তন আনতে হবে। আমাদের জাতির ভেতরে এমন কিছু রয়ে গেছে- যত শাস্তিই দিই, সেটার বীজ বোধহয় রয়েই যায়। সেই বীজ থেকে মুক্তি লাগবে। তাই কাগজে-কলমে সংস্কার নয়, দরকার গভীরতম সংস্কার।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, জুলাই আমাদের পুনর্জন্মের মাস, এটা শুধু স্বৈরাচার মুক্তির মাস নয়। জুলাই শিক্ষাকে কাজে লাগিয়ে আমাদের নতুন পথ রচিত হবে। জুলাইয়ের শিক্ষা এখনও তাজা আছে। মাঝেমধ্যে ভয় হয়, আমরা যেনো এই শিক্ষা ভুলে না যাই। তিনি বলেন, সংস্কার মানে শুধু কয়েকটা কাগজের সংস্কার নয়, মনের গভীরতর জায়গার সংস্কার করতে হবে। গভীর সংস্কার না হলে দেশে আবারও স্বৈরাচার চলে আসতে পারে।
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, জুলাই গণহত্যার বিচার এমনভাবে করা হবে যেনো, রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ব্যবহার করে কখনও নীরবতা দমন বা দেশের জনগণকে ধ্বংস করা না যায়।
অন্যদিকে, লিখিত বক্তব্যে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সংস্কার কর্মসূচির পাশাপাশি আমরা গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ীদের আইনের আওতায় আনতে কাজ করছি। কিন্তু বিচার মানে শুধু শাস্তি নয়-বিচার মানে এই নিশ্চয়তা প্রদান করা যে, রাষ্ট্রক্ষমতা আর কখনো জনগণের বিরুদ্ধে ব্যবহার হবে না।
রাজনৈতিক ব্যবস্থা গঠনের লক্ষ্যে জাতীয় ঐকমত্য গড়ার চেষ্টা করা হচ্ছে-উল্লেখ করেন প্রধান উপদেষ্টা। বলেন, এই ঐকমত্য এমন একটি ব্যবস্থাকে নিশ্চিৎ করবে যা অন্তর্ভুক্তিমূলক, অংশগ্রহণমূলক এবং বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করে। আমাদের লক্ষ্য একটাই-একটি বাংলাদেশ গঠন করা, যেখানে প্রতিটি নাগরিক শান্তিতে, মর্যাদায়, গর্বে ও স্বাধীনতায় বাঁচতে পারে।
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে রোহিঙ্গা সংকট পর্যন্ত, এমনকি গত বছরের জুলাই-আগস্টের সংকটকালীন সময়েও জাতিসংঘ সবসময় বাংলাদেশের পাশে ছিল বলেও উল্লেখ করেন প্রধান উপদেষ্টা।