আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজা ঘিরে সারাদেশে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পূজা শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে মাঠে থাকবে সশস্ত্র বাহিনী, পুলিশ, র্যাব, বিজিবি ও আনসার বাহিনী। পাশাপাশি সন্ধ্যা ৭টার মধ্যেই প্রতিমা বিসর্জন শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত প্রস্তুতি সভা শেষে ব্রিফিংয়ে তিনি এসব তথ্য জানান। জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “এবার পূজামণ্ডপ কমিটির পক্ষ থেকে কোনো উদ্বেগ জানানো হয়নি। সারাদেশে শান্তিপূর্ণ পরিবেশেই দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। তবে দুষ্কৃতিকারীরা যেকোনো উৎসব বা জনসমাগমে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করতে পারে। তাই আমাদের সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।”
তিনি জানান, পূজামণ্ডপগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এ বছর একটি নতুন মোবাইল অ্যাপ চালু করা হয়েছে। এই অ্যাপের মাধ্যমে যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনার অভিযোগ দ্রুত জানানো যাবে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে পারবে। বিশেষ করে সীমান্ত এলাকার পূজামণ্ডপগুলোতে বিজিবি মূল দায়িত্ব পালন করবে, অন্যদিকে প্রতিটি মণ্ডপে আনসার, পুলিশ ও অন্যান্য বাহিনী মোতায়েন থাকবে।
উপদেষ্টা আরও বলেন, “পূজামণ্ডপের আশেপাশে কোনো অবৈধ মেলা, মদের আড্ডা বা গাঁজার আড্ডা বসতে দেওয়া হবে না। তবে পূজা কমিটির অনুমতি সাপেক্ষে সীমিত পরিসরে কিছু দোকান থাকতে পারে।” তিনি আয়োজকদের অনুরোধ করে বলেন, অনেক সময় অনুমোদিত তালিকার বাইরে অতিরিক্ত মণ্ডপ তৈরি হয়। আগেভাগেই তালিকা দিয়ে দিতে হবে, যাতে সেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করা যায়।
সরকারি হিসেবে এ বছর সারাদেশে ৩১ হাজার ৫৭৬টি পূজামণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। তবে পূর্ণাঙ্গ তালিকা না আসায় সংখ্যা বেড়ে আনুমানিক ৩৩ হাজার হতে পারে বলে জানানো হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা রেঞ্জে ৭ হাজার ১৩৬টি, চট্টগ্রাম রেঞ্জে ৪ হাজার ২৮৮টি, রাজশাহী রেঞ্জে ৩ হাজার ৪৬০টি, সিলেট রেঞ্জে ২ হাজার ৪৮০টি, খুলনা রেঞ্জে ৪ হাজার ৫৩৪টি, রংপুর রেঞ্জে ৫ হাজার ১৭৫টি, বরিশাল রেঞ্জে ১ হাজার ৬১৪টি এবং ময়মনসিংহ রেঞ্জে ১ হাজার ৫৯৯টি মণ্ডপ থাকবে।
প্রতিমা বিসর্জন প্রসঙ্গে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “আমরা সবাইকে একই নির্দেশনা দিয়েছি। সন্ধ্যা ৭টার আগেই বিসর্জন শেষ করতে হবে।”
তিনি আশ্বস্ত করে বলেন, “এবারের পূজাকে কেন্দ্র করে কোনো পক্ষ থেকে উদ্বেগ নেই। আমরা চাই শান্তিপূর্ণ পরিবেশে পূজা উদযাপিত হোক এবং সবাই নিরাপদ থাকুক।”