স্টাফ রিপোর্টার | ঢাকা, ২২ অক্টোবর ২০২৫
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে শান্তিপূর্ণ, অবাধ ও উৎসবমুখর করতে সকল রাজনৈতিক দলের সহযোগিতা চেয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, “সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আমরা ইতোমধ্যে কার্যকর পদক্ষেপ নিয়েছি, সামনে আরও উদ্যোগ নেওয়া হবে।”
বুধবার রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় পৃথক দুটি বৈঠকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এবং জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনা করেন তিনি।
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রতিটি রাজনৈতিক দলের উদ্দেশে বলেন,
“নির্বাচন যেন দেশের মানুষের কাছে উৎসব হয়ে ওঠে—সে জন্য আপনাদের সক্রিয় ও গঠনমূলক সহযোগিতা প্রয়োজন।”
—
জুলাই সনদ ও নির্বাচনকে ঘিরে বিস্তারিত আলোচনা
বৈঠকে এনসিপি ও জামায়াত নেতারা জুলাই সনদের বাস্তবায়ন পদ্ধতি, গণভোটের সময়কাল, এবং জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচারের রোডম্যাপ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
প্রধান উপদেষ্টা জানান, জুলাই সনদের বাস্তবায়ন নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন কাজ করছে এবং শিগগিরই তার রূপরেখা প্রকাশ করা হবে। এ সময় তিনি এনসিপিকে সনদে স্বাক্ষরের আহ্বান জানিয়ে বলেন,
“এই সনদ জাতির জন্য একটি মহামূল্যবান ঐতিহাসিক দলিল। এখানে সবার অংশগ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”
—
এনসিপি: রোডম্যাপ ও বাস্তবায়নে নিশ্চয়তা চায়
এনসিপির আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম প্রধান উপদেষ্টার কাছে দাবি জানান,
“নির্বাচনের আগেই জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচারের রোডম্যাপ ও সনদ বাস্তবায়নের বিষয়ে স্পষ্ট নিশ্চয়তা দিতে হবে।”
তিনি জানান, এনসিপি এরইমধ্যে ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আলোচনার জন্য চিঠি দিয়েছে।
প্রতিনিধিদলে আরও ছিলেন—সারজিস আলম, সামন্তা শারমিন ও খালেদ সাইফুল্লাহ।
—
জামায়াত: আগে গণভোট, পরে নির্বাচন চান তাহের
এনসিপির সঙ্গে বৈঠকের পরপরই জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ তাহের-এর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে।
তাঁরা বলেন,
“জুলাই সনদে যেহেতু নির্বাচনী সংস্কারের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রয়েছে, তাই জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট হওয়া জরুরি।”
তাহের আরও বলেন,
“একই দিনে নির্বাচন ও গণভোট হলে তা প্রশাসনিকভাবে কঠিন হয়ে পড়বে। আলাদা দিনেই গণভোট হওয়া শ্রেয়।”
প্রতিনিধিদলে আরও ছিলেন—অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, এ. টি. এম. মা‘ছুম ও রফিকুল ইসলাম খান।
প্রধান উপদেষ্টার আশ্বাস: রদবদল, সমন্বয় ও পর্যবেক্ষণ হবে সরাসরি
বৈঠকে উপস্থিত নেতৃবৃন্দকে আশ্বস্ত করে প্রধান উপদেষ্টা জানান,
“নির্বাচনকালীন প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সব রদবদল আমি সরাসরি তদারকি করব। নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সমন্বয় করে সব পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।”
সরকারের পক্ষ থেকে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন—পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল এবং শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।