
এম জাফরান হারুন::
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী জনগণের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠা ও জনকল্যাণমূলক কার্যক্রমকে অগ্রাধিকার দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে সারাদেশে বিভিন্ন সামাজিক উদ্যোগ পরিচালনা করে আসছে। “একটি আদর্শ রাষ্ট্র গঠনের প্রথম শর্ত হলো মানুষের ন্যায়সঙ্গত অধিকার নিশ্চিত করা। সেই লক্ষ্যেই আমরা কাজ করছি”— এমন মন্তব্য করেন জামায়াতের ঢাকা মহানগর দক্ষিনের সেক্রেটারি ও পটুয়াখালী–২ (বাউফল) আসনে জামায়াতে ইসলামীর মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ।
তিনি বলেন, “স্বাস্থ্যসেবা মানুষের মৌলিক অধিকার, তাই এ অধিকার সবার দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। পর্যায়ক্রমে জনগণের সব মৌলিক অধিকার বাস্তবায়ন করা হবে।”
শুক্রবার সকালে পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কালিশুরী এসএ স্কুল মাঠে বিনামূল্যে মেডিকেল সেবা কার্যক্রমের উদ্বোধন উপলক্ষে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
এ সময় তিনি আরও বলেন, “স্বাস্থ্যসেবায় অবহেলা ও বৈষম্য দূর করা শুধু সরকার বা রাজনৈতিক দলের কাজ নয়; সমাজের প্রত্যেক সক্ষম মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে। আমাদের এই উদ্যোগের উদ্দেশ্য অসহায় মানুষের মুখে সামান্য স্বস্তি এনে দেওয়া।”
দিনব্যাপী আয়োজিত এ ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পটি পরিচালিত হয় এসএ ইনস্টিটিউশন বিদ্যালয় মাঠে। এতে চক্ষু, মেডিসিন ও ডায়াবেটিস বিভাগে ৬ জন অভিজ্ঞ মহিলা ও পুরুষ চিকিৎসক স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে সেবা প্রদান করেন। ক্যাম্পে সহস্রাধিক রোগীকে বিনামূল্যে চিকিৎসাপরামর্শ, প্রয়োজনীয় টেস্ট, ডায়াবেটিস পরীক্ষা, ফ্রি চশমা এবং বিভিন্ন ধরনের ওষুধ বিতরণ করা হয়।
স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রমে স্থানীয় জনসাধারণের ব্যাপক সাড়া পাওয়া গেছে। অনেকেই এমন উদ্যোগকে গ্রামের মানুষের জন্য ‘আশীর্বাদ’ বলে মন্তব্য করেন। আয়োজকরা জানান, আগামী দিনগুলোতে বাউফল উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে পর্যায়ক্রমে আরও ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হবে।
অনুষ্ঠান শেষে ড. মাসুদ স্থানীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে বিভিন্ন বুথ ঘুরে দেখেন এবং চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের খোঁজখবর নেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন, রাজনৈতিক মতপার্থক্যের ঊর্ধ্বে উঠে মানুষের কল্যাণেই সবাই কাজ করবে— এতে সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন দ্রুত দৃশ্যমান হবে।
রোগীদের মধ্যে অনেকেই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। মোহাম্মদ আলী (৫২) বলেন, “চোখের সমস্যায় আমরা অনেক দিন ভুগছিলাম। আজ এখানে এসে বিনামূল্যে চশমা এবং ডাক্তারদের পরামর্শ পেয়েছি। সত্যিই অনেক উপকার হলো।”
রোকসানা খাতুন (৩৮) বলেন, “ডায়াবেটিস পরীক্ষা ও ওষুধ বিনামূল্যে পাওয়া মানে দরিদ্র মানুষদের জন্য সত্যিই আশীর্বাদ।”
আজিজুর রহমান (৬৫) বলেন, “চিকিৎসার জন্য শহরে যেতে হয় অনেক সময়। এখানে এসে এক জায়গায় সব সেবা পেয়ে আনন্দিত। ড. মাসুদ ও জামায়াতের উদ্যোগ প্রশংসনীয়।”
শারমিন আক্তার (২৯), স্থানীয় স্কুল শিক্ষক, বলেন, “আমাদের এলাকায় অনেক মানুষ স্বাস্থ্য সচেতন নয়। আজকের ক্যাম্প তাদের সচেতন করেছে। বিনামূল্যে চিকিৎসা দরিদ্রদের জন্য আশীর্বাদ।”