• সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ০৯:৪৯ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
নৈরাজ্যের আশঙ্কায় গণতন্ত্র রক্ষায় সব দলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান মির্জা ফখরুলের,,, আজ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়: সরাসরি সম্প্রচার করবে বিটিভি,, বিশ্বের একমাত্র স্বৈরশাসক নেত্রী ছিলেন শেখ হাসিনা – মেজর হাফিজ/দৈনিক ক্রাইম বাংলা।। নির্বাচনের আগেই গণভোট বাতিল ও তিন উপদেষ্টার অপসারণ দাবি ৮ দলের,,,, দেশের সব সমস্যার সমাধান নির্বাচিত সরকারের হাতে—আমীর খসরু,,, বাউফলে এমপি শহিদুল আলম তালুকদারের নির্দেশে ৩১ দফার লিফলেট বিতরণ করলেন সহধর্মিণী/দৈনিক ক্রাইম বাংলা।। কুরআন প্রতিযোগিতায় শ্রেষ্ঠ বাউফল মদিনাতুল উলূম নুরানি হাফেজি ক্যাডেট মাদ্রাসা/দৈনিক ক্রাইম বাংলা।। নবগঠিত কমিটির পরিচিতি ও জাতীয় নির্বাচন নিয়ে আলোচনা,,, গণহত্যাকারী শেখ হাসিনার কোনো লকডাউন বাংলাদেশে চলবে না”— বাউফলে ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের ঘোষণা/দৈনিক ক্রাইম বাংলা।। প্রধান উপদেষ্টা স্বাক্ষরিত সনদ নিজেই লঙ্ঘন করেছেন: সালাহউদ্দিন আহমদ,,,

আজ সাংবাদিক লিটন বাশারের চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী।দৈনিক ক্রাইম বাংলা।

রিপোর্টার: / ৩৫৪ পঠিত
আপডেট: রবিবার, ২৭ জুন, ২০২১

 আল আমিন খান  বরিশাল :: জন্মিলে মরতে হবে এটা চিরন্তন সত্য কথা। কিন্তু কিছু মানুষ অথবা অতি আপনজনের মৃত্যু অনেকের মধ্যে ব্যাপক শূন্যতর সৃষ্টি করে। কোন কিছুর বিনিময়ে সেই শূন্যতা পূরণ হয়না। অনন্তকাল সেই মানুষকে হারাণোর কষ্ঠ নিয়ে বেঁচে থাকতে হয়। সাংবাদিক লিটন বাশার তেমনি একজন মানুষ অথবা বরিশাল সাংবাদিক অঙ্গনের অতি আপন একজন ছিলেন। যেকারণে প্রতিবছর জুন মাস এলেই বরিশালের সাংবাদিক পাড়া স্বজন হারানোর শোকে শোকাহত হয়ে পড়ে।

২০১৭ সালের ২৭ জুন আকস্মিক সকলকে কাঁদিয়ে লিটন বাশার অকালেই পাড়ি জমান না ফেরার দেশে। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বাবার সাথে ঈদ উদযাপন করতে লিটন বাশার চরমোনাইয়ের গ্রামের বাড়িতে গিয়েছিলেন। সুস্থ সবল মানুষটি ঈদের দ্বিতীয় দিন সকালে অসুস্থবোধ করলে চিকিৎসার জন্য তাঁকে দ্রুত বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু সকল চেষ্ঠা করে ব্যর্থ হওয়ার পর অল্প সময়ের মধ্যেই চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষনা করেন। তাঁকে চিরতরে হারিয়ে অভিভাবক শুন্য হয়ে পড়ে কর্মরত অনেক সাংবাদিক।

২৭ জুন। ক্ষন গননায় বরিশালের সাহসী সাংবাদিক লিটন বাশারের ৪র্থ মৃত্যুবার্ষিকী। তরুন ও মেধাবী সাংবাদিক লিটন বাশার মৃত্যুর আগ পর্যন্ত জাতীয় দৈনিক ইত্তেফাকের বরিশাল অফিস প্রধানের দায়িত্ব পালন করে গেছেন।

বরিশাল সদর উপজেলার চরমোনাই এলাকার সন্তান লিটন বাশার সাংবাদিকতাকে ধ্যান ও জ্ঞান মনে করে এ পেশায় প্রতিষ্ঠা পেতে কঠোর পরিশ্রম করেছেন। তিনি বরিশালের স্থানীয় বিভিন্ন দৈনিকে কাজ করার পাশাপাশি উপকূলীয় এলাকা ভোলা জেলায়ও অবস্থান করে দীর্ঘদিন সেখানে সাংবাদিকতা করেছেন। সংবাদের জন্য ছুটে বেড়িয়েছেন বরিশালের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত। তিনি পেশাগত অনেক সাংবাদিকের ভরসার আশ্রয়স্থল হিসেবে তাদের বিপদে-আপদে পাশে দাঁড়িয়েছেন সবার আগে। তাঁর কাছে কোন সাংবাদিক সমস্যা নিয়ে গিয়ে সমাধান পাননি এরকম কোন নজির নেই। বরিশালসহ দেশের কোথাও সাংবাদিক নির্যাতন ও হয়রানির খবর কানে আসলেই লিটন বাশার রাজপথে সরব হতেন সর্বাগে। ক্ষমতাসীনদের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে প্রতিবাদী সহকর্মীদের নিয়ে তিনি অন্যায়ের প্রতিবাদ করতেন নির্ভয়ে। আদর্শিকভাবে প্রগতিশীল ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার এ মানুষটি সাংবাদিকদের স্বার্থ রক্ষায় কারো সাথে কখনো আপোষ করেননি। এজন্য তাঁকে নির্যাতনের পাশাপাশি হয়রানীর শিকার হতে হয়েছে। সদাহাস্যোজ্জল ও ভালো মণের অধিকারী লিটন বাশার সবসময় তাঁর নিজস্ব কর্মস্থলের পাশাপাশি বরিশাল প্রেসক্লাবকেও জমিয়ে রাখতেন প্রানবন্ত আড্ডায়। প্রেসক্লাবের স্বার্থের প্রশ্নেও তিনি ছিলেন অবিচল। বরিশাল প্রেসক্লাবের নির্বাচন এলেই তাকে ঘিরে সাংবাদিকদের একটা বড় অংশ ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্যানেল তৈরীর মাধ্যমে নির্বাচনে অংশ নিতো। বয়সে প্রবীন না হলেও নির্বাচনী কৌশল ভালভাবে রপ্ত করার কারণে লিটন বাশার প্রবীন সাংবাদিকদেরও কাছে ব্যাপক জনপ্রিয় ছিলো। মূলত তার নেতৃত্বেই প্রবীন-নবীন সমন্বয়ে একটি প্যানেল গঠিত হতো। কথিত আছে তিনি যেই প্যানেলকে সমর্থন করতেন অথবা যাদের যাদের সমর্থন করতেন বিজয়ের ক্ষেত্রে তাদের পাল্লাই বেশী ভাড়ি ছিলো। তাঁকে বরিশালের সাংবাদিক অঙ্গন জানতো একজন নির্বাচনী মেকার হিসেবে। তাঁর দূরদৃষ্টি সম্পন্ন নেতৃত্বের গুনে তিনি নিজে যেমন নির্বাচনে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করে বিজয়ী হতেন তেমনি তাঁর প্যানেলকেও বিজয়ী করতে মুখ্য ভ‚মিকা পালন করতেন। তিনি অল্প সময়েই সাংবাদিকদের নেতৃত্ব পর্যায়ে আসীন হন।

সর্বশেষ ২০১৭ সালে অনুষ্ঠিত শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত বরিশাল প্রেসক্লাব নির্বাচনে তিনি সভাপতি পদে প্রথমবারের মতো অংশগ্রহন করে তুমূল প্রতিদ্ব›িদ্বতা গড়ে মাত্র এক ভোটে পরাজিত হন। তবে তাঁর নেতৃত্বের গুনে ওই সময়কার তাঁদের প্যানেলের সদস্যরা সাধারণ সম্পাদকসহ বেশীরভাগ পদেই জয় লাভ করেছিলেন। লিটন বাশারের অকাল মৃত্যুতে বরিশাল সাংবাদিক অঙ্গনে নেতৃত্বের সংকট হয়েছে এটা বলা যায় নিঃসন্দেহে। তিনি সকলকে ঐক্যবদ্ধ করে যেভাবে সংগঠনকে গতিশীল রাখতেন তাতে আজ কেন জানি ভাটা পড়েছে। নিজেদের মধ্যকার অনৈক্যের কারণে আজ একাধিক সংগঠনের আত্মপ্রকাশ ঘটছে। সাংবাদিকদের বিপদে আজ আর তেমন কাউকে এগিয়ে আসতে দেখা যায়না। জীবদ্দশায় লিটন বাশার পেশাজীবী সাংবাদিকদের সংগঠন বরিশাল সাংবাদিক ইউনিয়নেরও নেতৃত্ব প্রদান করেছেন। তিনি ছিলেন ওই সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক।

বিনোদন প্রিয় মানুষ লিটন বাশার বরিশাল সাংস্কৃতিক সংগঠনভ‚ক্ত অন্যতম নাট্য সংগঠন প্রজন্ম নাট্যকেন্দ্রের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন দীর্ঘ কয়েক বছর। লিটন বাশার মৃত্যুকালে বাবা, ছোট ভাই, সহধর্মিনী ও অবুঝ এক সন্তান রেখে গেছেন। তাঁর পরিবারের স্বজনরা এখন কেমন আছেন সে খবর এখন আর তাঁর সহকর্মীদের অনেকের কাছেই নেই বললেই চলে। তিনি নেই আজ চার বছর হলো। তবে তাঁর শূন্যতা অনুভব করে এখনো অনেকেই নীরবে চোখের জল ফেলে। অনেকে আবার আফসোস করে বলেন, আজ যদি তিনি বেঁচে থাকতেন তাহলে নিজেদেরকে অভিভাবক শূন্য মনে হতো না।

মৃত্যুবার্ষিকীর এইদিনে তাঁকে গভীরভাবে স্মরণ করবে তাঁর অনুসারী ও শুভাকাঙ্খীরা। যেখানে যেখানেই যেভাবে থাকবেন, মহান দয়ালু সৃষ্ঠিকর্তা তাঁকে ভালো রাখবেন বলে প্রত্যাশা রাখি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ