
ঢাকা, রোববার:
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস পরিবেশ, প্রকৃতি ও নদীর ক্ষতি না করে দেশের সড়ক, রেল, বিমান ও নৌপথের সমন্বিত উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার আহ্বান জানিয়েছেন।
রোববার রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত ‘সেন্ট্রাল ইন্টিগ্রেটেড মাল্টিমোডাল ট্রান্সপোর্ট সেক্টর মাস্টার প্ল্যান অব বাংলাদেশ’ সংক্রান্ত প্রান্তিক মূল্যায়ন ও কৌশলগত পরিকল্পনা বিষয়ক আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে তিনি এ আহ্বান জানান।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, সড়ক পরিবহন ও সেতু এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন, নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন, স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. শেখ মইনউদ্দিন, বিডা ও বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন, এবং তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যবসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব ও পদস্থ কর্মকর্তারা।
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা বলেন,
> “আমাদের যোগাযোগ ব্যবস্থা বর্তমানে অগোছালো অবস্থায় রয়েছে। দ্রুত শৃঙ্খলার মধ্যে না আনলে এটি অর্থনীতির জন্য গলার ফাঁসে পরিণত হবে। তবে পরিবেশের কোনো ক্ষতি করা যাবে না—নদী ও পানিকে শান্ত রাখতে হবে, কারণ পানি আমাদের বড় সম্পদ।”
বৈঠকে সড়ক ও জনপথ বিভাগ সারাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার সমন্বয় এবং প্রয়োজনীয় সংস্কার নিয়ে একটি প্রাথমিক কৌশলগত পরিকল্পনা উপস্থাপন করে। এতে রেল, নৌ ও সড়কপথের সুষম ব্যবহার নিশ্চিত করার মাধ্যমে জাতীয় যোগাযোগ ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা আনার দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়।
প্রধান উপদেষ্টা সংশ্লিষ্টদের প্রশংসা জানিয়ে বলেন,
> “এই পরিকল্পনা একটি শক্তিশালী ধারণা দিয়েছে। এখন এটিকে বাস্তবায়নের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। পরিকল্পনা করতে হবে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিকে মাথায় রেখে এবং আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক যোগাযোগের দিকেও গুরুত্ব দিতে হবে।”
পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন,
> “যেসব এলাকায় অল্প কিছু সড়ক নির্মাণ করলেই পুরো অঞ্চলকে জাতীয় সংযোগের আওতায় আনা সম্ভব, সেসব ক্ষেত্রে দ্রুত পরিকল্পনা নিতে হবে।”
স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ জানান,
> “স্থানীয় সরকারের কাজগুলো আরও পরিকল্পিতভাবে করার লক্ষ্যে একটি ‘প্ল্যানার্স উইং’ গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।”
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. শেখ মইনউদ্দিন বলেন,
> “যোগাযোগ খাতে একটি সামষ্টিক মডেল দাঁড় করানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যা দেশের অর্থনৈতিক লাইফলাইন তৈরি করবে।”
বিডা চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন জানান,
> “২০৩০ সালের মধ্যে চট্টগ্রামে আরও তিনটি নতুন বন্দর চালু হবে। এসব বন্দরকে কেন্দ্র করে কার্যকর সড়ক যোগাযোগ নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি।”
—
সংক্ষেপে:
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আহ্বান— দেশের সার্বিক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন করতে হবে এমনভাবে, যাতে পরিবেশ, নদী ও প্রকৃতির কোনো ক্ষতি না হয়, বরং টেকসই উন্নয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ এগিয়ে যায়।